দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ - পিরিয়ড হলে কি খাওয়া উচিত

দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ  - পিরিয়ড হলে কি খাওয়া উচিত

পোস্ট সূচীপত্রঃ দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ - পিরিয়ড হলে কি খাওয়া উচিত

দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ

প্রতিটা মেয়ের সময়মতো মাসিক হওয়া একটি স্বাভাবিক বিষয়। অনেক মেয়েদের মাসিক ঠিকমতো হয় না, মাসে দুই থেকে তিনবার হয়ে থাকে আবার অনেকের দুই তিন মাস পর পর মাসিক হয়ে থাকে। এটা নারীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। আর এই সকল সমস্যাগুলো হওয়ার কারণ হলো, [হলোপলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের] এর জন্যেই মাসিক অনিয়মিত হয়ে থাকে।

তাছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণে এই মাসিক বা পিরিয়ড নিয়ম অনুযায়ী হয় না। আর এ সকল সমস্যা বেশিদিন ধরে হতে থাকলে, আপনারা বাড়িতে বসে থাকবেন না অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। কারণ একটি নারীর পিরিয়ড বা মাসিক ঠিকঠাক না হলে তার বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয় তার মধ্যে প্রধান কারণ হলো ,তার বিয়ের পর গর্ভধারণে সমস্য,। তাই আপনারা অবহেলা করবেন না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের কাছে গিয়ে ভালোভাবে চিকিৎসা করাবেন।

অনিয়মিত মাসিক বলতে যা বোঝাই

প্রতিটা নারীর হরমোনের প্রভাবে প্রতিমাসে জরায়ু থেকে চক্র কারে যে সকল পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে জরায়ু দিয়ে রক্ত নিঃসৃত হয়ে যোনি পথ দিয়ে বের হয়ে আসে তাকে মাসিক বলে বা পিরিয়ড। আর পিরিয়ড চলাকালীন বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা, শরীর ব্যথা, পিট ব্যথা, হাত পায়ের কামড় ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাদের মাসিক প্রতি মাসে নিয়মিত হয় না, দুই মাস পর এক বার হয় অথবা মাসে ২-৩ বার হয় এটাকে অনিয়মিত মাসিক বোঝায়।

দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ গুলো জেনে নিন,

অবিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে ঃ অনেক মেয়েদের মাসিক মাসে দুইবার থেকে তিনবার হয়ে থাকে, অথবা কারো দুই তিন মাস পর মাসিক হয়। আর এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে বুঝতে হবে অনিয়মিত মাসিক কি হয়েছে। আর এর বিভিন্ন কারণ রয়েছে, অবিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে যেমন, যে সকল মেয়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, শরীলে পুষ্টির অভাব তাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক দেখা দিতে পারে।
আরো পড়ুনঃ পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে কি করনীয় জেনে নিন
তাছাড়া হরমোনের পরিবর্তনের কারনেও অনিয়মিত মাসিক দেখা দেয়। আর অনিয়মিত মাসিক দেখা দিলে আপনারা অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাবেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন। তাছাড়া অনিয়মিত মাসির চলতে থাকলে পরে আপনার আস্তে আস্তে অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

বিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে ঃ বিবাহিত এবং অবিবাহিত মেয়েদের অনিয়মিত মাসিকের আলাদা আলাদা কিছু কারণ থাকে যেমন, অনেক বিবাহিত মেয়েরা পিল সেবন করে , পিল সেবন করার সময় যদি পিল ঠিকমতো নিয়ম অনুযায়ী না খায়, যেমন সাদা ওষুধগুলো খাওয়ার পর যদি লাল ওষুধগুলো না সেবন করে আবার আরেক ফাইল থেকে আবার সাদা ওষুধ খেতে শুরু করে তাহলে তার মাসিক বন্ধ হয়ে যাবে। আর যখন লাল ওষুধ খাওয়া শুরু করবে তখন আবার মাসির হতে শুরু করবে, আর তাই বিবাহিত মেয়েদের মাসিক দুই তিন মাস পরও হয়ে থাকে।

আবার পিল খাওয়া ছেড়ে দিলে মাসে ২-৩ বার ও মাসিক হতে পারে। সেজন্য আপনারা পিল সেবন করলে নিয়ম অনুযায়ী পিল সেবন করবেন। এতে কোন রকম সমস্যা হবে না কিন্তু যদি আপনারা ঠিকঠাক পিল সেবন না করেন তাহলে আরো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর যদি এরকম সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। বাচ্চা না হওয়ার আগে পিল খাওয়া উচিত নয় একটি বাচ্চা হয়ে যাবার পর পিল খেলে সমস্যা তেমন হয় না ।কারণ পিল খাওয়ার ফলে অনেকের বাচ্চা ধারণের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় ।তাই আপনারা একটি বাচ্চা নেওয়ার পর এই পিল খাওয়া শুরু করবেন তারপরেও আপনারা ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

পিরিয়ড হলে কি খাওয়া উচিত

মাসিক চলাকালীন প্রত্যেকটা মেয়ের জন্য অনেক কষ্টকর। অনেক সময় মাসিক হলে মেয়েদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় যেমন মাথাব্যথা, ক্লান্তি ভাব, ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, মেজাজ পরিবর্তন ইত্যাদি এ সকল সমস্যা হতে পারে। এবং এ সময় খাবার খাওয়ার রুচি একদম কমে যায়, এর ফলে শরীর আরো দুর্বল হয়ে পড়ে। সেজন্য এই সময় খাবারের প্রতি বেশি খেয়াল রাখতে হবে, যেন শরীরে পুষ্টির ঘাটতি না পরে। এই সময় শরীর এমনিতেই দুর্বল থাকে আর খাওয়া-দাওয়া কম করলে শরীর বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ধরতে পারে।
আরো পড়ুনঃ অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ জেনে নিন
পিরিওড চলাকালীন বা মাসিক চলাকালীন পুষ্টিকর খাবার এ সকল সমস্যা গুলোকে কমাতে ভীষণভাবে সাহায্য করে। তাই এই সময় কিছু খাবার আছে যা শরীরের জন্য ভালো এবং কিছু খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর আর এই সকল ক্ষতিকর খাবারগুলো মাসিক অবস্থায় এড়িয়ে চলায় ভালো। তাই আজ আমি আপনাদের পিরিয়ড চলাকালীন কোন খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন এবং কোন খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হবে সেই বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করব।

পিরিয়ড অবস্থায় যে সকল খাবারগুলো খাবেন

শাকসবজিঃ পিরিয়ড চলাকালীন শাক সবজির শরীরের জন্য ভীষণ প্রয়োজন। কারণ সেই সময় শরীরে ফাইবারের প্রয়োজন আছে আর আর ফাইবার জাতীয় যেকোনো খাবার অন্ত্রের চলাচল ঠিক রাখে এবং শরীরের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ শাকসবজিতে ভিটামিন বি, আইরন ক্যালসিয়াম ও তাছাড়া রয়েছে উচ্চ মাত্রায় আঁশ আর এর ফলে হজম শক্তি উন্নত হয়ে থাকে। আর পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে সুস্থ থাকার জন্য হজম শক্তি বৃদ্ধি হওয়ার প্রয়োজন। আর হজম শক্তি বেশি থাকলে পেট ব্যথা ও গ্যাসের সমস্যা দূরে থাকবে তাই অবশ্যই পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় শাক-সবজি খাওয়া প্রয়োজন।

ফলঃ পিরিয়ড চলাকালীন সময়ের শরীরে পানির প্রয়োজন বেশি সেজন্য, পিরিয়ড চলা অবস্থায় পানি সমৃদ্ধ যে সকল ফল রয়েছে সেগুলো শরীরের জন্য বেশি উপকারী। যেমন, ডাবের পানি, তরমুজের রস, শসা, আপেলের জুস, বাঙ্গি ইত্যাদি। তাছাড়াও সেই সময় শরীরে ভিটামিন সি এর ও প্রয়োজন তাই ভিটামিন সি যুক্ত ফল ও শরীরের জন্য উপকারী। আর ভিটামিন সি জাতীয় ফলগুলো হল আমড়া, পেয়ারা, কমলালেবু, আমলকি, লেবু ,জাম্বুরা ইত্যাদি এ সকল ফলগুলো শরীরে আইরনের যোগান দেয় আর এই সময় আয়রন জাতীয় খাবার প্রয়োজন।

তাছাড়া আপনারা পিরিয়ড অবস্থায় কলা খেতে পারেন কলাতে রয়েছে পটাশিয়াম এবং ভিটামিন যা শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজন। যা আপনাদের শরীরের ক্লান্তি ভাব বিষন্নতা দূর করতে সাহায্য করবে। আর আপনাদের যদি পিরিয়ড অবস্থায় কোন মিষ্টি খাবার খেতে ইচ্ছে করে তাহলে আপনারা যে কোন মিষ্টি জাতীয় ফল খাবেন এতে আপনাদের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক থাকবে। কারন ভিডিওড অবস্থায় যদি গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে শরীরে সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই মিষ্টি খাবার হিসেবে যে কোন একটা মিষ্টি ফল খাবেন।

পানিঃ জানি পানির অপর নাম জীবন পানি আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা ও বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে মুক্তি দেয়। আপনারা পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করবেন, কারণ যখন পিরিয়ড শুরু হয় তখন অনেক রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে রক্তের আপনাদের শরীর থেকে পানীয় বেরিয়ে যেতে থাকে। তাই সেই সময় আমাদের শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা ভীষণ প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃ পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয়
আইরন জাতীয় খাবারঃ পিরিয়ড অবস্থায় শরীরে আইরনের মাত্রা কমে যায় এর ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় যেমন শরীর ক্লান্ত লাগা, হাত পা ব্যথা, শরীর ব্যথা এ সকল বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে হবে, যে সকল খাবারে আয়রন রয়েছে সে সকল খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন। যেমন ডিম, কচুর শাক, মাছ, মাংস, কিসমিস, খেজুর পুঁইশাক ইত্যাদি।

আদা চাঃ পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় পেটে অনেক ব্যথা করে সেই সময় গরম গরম এক কাপ আদা চা পেটের ব্যথা কমাতে ভীষণভাবে সাহায্য করে। বমি বমি ভাব কমাতে আধা ভীষণভাবে কাজ করে। কিন্তু অতিরিক্ত আদা খাবেন না কারণ বেশি আদা খেলে গ্যাস করতে পারে।

পিরিয়ড অবস্থায় যেগুলো খাবেন না

পিরিয়ড অবস্থায় অতিরিক্ত মিষ্টি এবং লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার অ্যালকোহল বা অতিরিক্ত চা কফি খাবেন না কারণ অতিরিক্ত কোন কিছুই শরীরের জন্য ভালো না। আর পিরিয়ড অবস্থায় একটা কথা মনে রাখবেন যে অতিরিক্ত টক খাবেন না অতিরিক্ত টক খেলে যাদের ব্লাড বেশি বা রক্ত বেশি যায় তাদের রক্তক্ষরণ বেশি হতে পারে। আর যাদের মনে হবে আপনার ব্লাড অনেক কম যাচ্ছে তাহলে আপনি একটু টক খেতে পারেন এতে আপনার ব্লাড ঠিকঠাক ভাবে যাবে ,কিন্তু অতিরিক্ত কোন কিছু ভালো নয়।

শেষ কথা

এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ - পিরিয়ড হলে কি খাওয়া উচিত এরকম আরো অনেক নতুন নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url