শেখ রাসেল রচনা - শেখ রাসেল রচনা ১০০ শব্দ

শেখ রাসেল রচনা - শেখ রাসেল রচনা ১০০ শব্দ

শেখ রাসেল রচনা - শেখ রাসেল রচনা ১০০ শব্দ

ভূমিকাঃ

রাসেল হল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদরের একমাত্র ভাই, আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের একমাত্র ছেলে। তার বয়স যখন ১১ বছর তখন সে ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে অল্প বয়সে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সে বেঁচে থাকলে হয়তো বাংলাদেশের একটি বড় কর্মের মাধ্যমে বাঙালি জাতির কাছে ইতিহাসে নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল করতো। তার বয়স হবার আগেই সে দুনিয়া থেকে চলে গিয়েছে। সে ছিল আমাদের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়নের মনি। সে তার ছোট ভাইকে অনেক ভালোবাসতো। সেক রাসেলের মৃত্যুর বর্ণনা শুনলে যে কোন মানুষের চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরে। কারণ সে তো ছিল একদম নিষ্পাপ একটা বাচ্চা তার তো কোন দোষ ছিল না।

শেখ রাসেলের জন্ম সালঃ

বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল তার জন্ম ১৯৬৪ সালের ১৮ই অক্টোবর সেই সময় পূর্ব পাকিস্তান ও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডিতে ৩২ নাম্বার বাসা বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেছেন। শেখ রাসেলের বড় বোন শেখ হাসিনা শেখ রাসেলের জন্মের পর তাকে গোসল করানোর শেষে তার নিজের ওড়না দিয়ে মাথা মুছিয়ে দিবে। শেখ রাসেল ছোটবেলা থেকে অনেক শান্তশিষ্ট ও অনেক বুদ্ধিমান ছিল। সে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের জন্মগ্রহণ করলে ও সে সমস্ত জাতির সন্তান। তার জন্মে সমগ্র জাতির মনের আনন্দ বইয়ের এনেছিল।

প্রিয় রাসেলের বাল্যকালঃ

শেখ রাসেল যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন দেশের অবস্থা উত্তপ্ত । চারিদিকে চলছিল পাকিস্তানিদের অত্যাচার। শেখ রাসেল জন্মের পর তার বাবার সান্নিধ্য খুব বেশি দিন পাননি কারণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে যাবার কারণে। কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের হাতে গ্রেফতার হন। প্রথমে তাকে ঢাকায় রাখা হলেও কিছুদিনের মধ্যে তাকে পাকিস্তানে হস্তান্তর করা হয়েছিল। সেসময় শেখ রাসেল ছিল অনেক ছোট তার বাবার সঙ্গে তার তেমন একটা সময় কাটানো হয়েছিল না।
 আরো পড়ুনঃ রচনা দেশ প্রেম
বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন তখন তার বড় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে শেখ রাসেল তার বাবাকে দেখতে কারাগারে গিয়েছিলেন। আর সে সময় তার বয়স ছিল দুই বছর এবং সে তার বড় বোন শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞাসা করলেন আমি কি বাবা বলে ডাকতে পারি, সে ছোট থেকেই ছিলেন অনেক বুদ্ধিমান। তার ছোটবেলাটা বেশিরভাগই কেটেছিল তার মা ও বোনদের সঙ্গে। আর ১১ বছর বয়সে যখন শেখ রাসেলের মৃত্যু হয়েছিল, তখন সে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়তো। আর তার স্কুলের নাম ছিল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজে ।

শেখ রাসেলের নামকরণের কাহিনীঃ

শেখ রাসেলের নামকরণের মধ্যেও একটি কাহিনী লুকিয়ে রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর সব সময়ই ছিলেন বিশ্বশান্তির পক্ষপাতী তিনি ছিলেন যুদ্ধের ঘোর বিরোধী তিনি সবসময় শান্তি পছন্দ করতেন। আর সেই জন্য শেখ মুজিবর ছিলেন নোবেল প্রাপ্ত দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের একজন বড় ভক্ত। সেই প্রসঙ্গে বলা যাই যে, বার্ট্রান্ড রাসেল তিনি শুধুই নোবেল বিজয় দার্শনিক অথবা সমাজবিজ্ঞানীই নয়, বার্ট্রান্ড রাসেল ছিলেন একজন যুদ্ধ বিরোধী বড় মাপের একজন ভালো নেতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য যখন সমস্ত পৃথিবী পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনায় সন্ত্রস্ত হয়েছিলেন তখন বার্ট্রান্ড রাসেল সেই সময় যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের জন্য অন্যতম একটি মুখ হয়ে আবির্ভূত হন। আর সেই সময় শেখ মুজিবর রহমান এমন ব্যক্তির ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে তার একমাত্র কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নাম
তার নামের সঙ্গে মিলিয়ে রেখেছেন।

শেখ রাসেলের নির্মম হত্যাকান্ডঃ

১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট সেই ভয়ানক রাত সম্পর্কে কমবেশি আমাদের সবারই জানা। সেই রাতের কথা মনে হলে যেন মনের ভিতর কেঁপে ওঠে। সেই রাতে আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পরিবার নির্মমভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের হাতে মৃত্যুবরণ করেন। আর সেই সময়ের নির্মম ঘটনা আমরা বিভিন্ন মাধ্যম দ্বারা জানতে পারি। সেই যুদ্ধের সময় শেখ রাসেলের বয়স ছিল ১১ বছর। সে কিছু জানতোই না বুঝতো না। সেই সময় বঙ্গবন্ধুর ঢাকা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাসাতে বা ভবনে থাকতো সেই বাসায় ট্যাংক ঘেরাও করে বঙ্গ বন্ধুর স্বপরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। আর তার মধ্যে ছিল আমাদের ছোট্ট আদরের শেখ রাসেল। সেও পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে হত্যা হয়েছিল।

শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু হওয়ার কারণঃ

শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু হওয়ার কারণ, সে কিভাবে আমাদের বন্ধু হয়ে উঠেছিল,তা জানতে হলে আপনাদের তার ছোটবেলার দিনগুলো তে ফিরে যেতে হবে। সেই ইতিহাসে যতোটুকু জানা গেছে শেখ রাসেল সেই সময় ছিল অনেক ছোট ও নিষ্পাপ ভোলা ভোলা কর্মকাণ্ডের একট নিষ্পাপ ছোট বাচ্চা। রাসেল যখন ছোট ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধুর বাসায় একটি কুকুর ছিল সেই কুকুরের নাম ছিল টমি তাকে টমি বলে ডাকা হতো। একদিন শেখ রাসেল সেই টমি বা কুকুরের সঙ্গে খেলা করছিল। আর খেলা করার সময় সে কুকুরটি একটু জোরে ডেকে উঠেছিল। সেই সময় আমাদের ছোট্ট শেখ রাসেল ভয় পেয়ে কান্না করে দিয়েছিল, সে মনে করেছিল টমি তাকে বকা দিচ্ছে।সে দৌড়ে তার বোন শেখ রেহেনার কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। তার এই ভোলা ভোলা সরলতার কারণেই সেই আমাদের বন্ধু হয়ে উঠে।

শেখ রাসেলের সঙ্গে ঘটা এক সুন্দর কাহিনীঃ

শেখ রাসেলের বয়স কম হলেও তার হৃদয় এবং মন ছিল অনেক উদার। শেখ রাসেল সব সময় মানুষের উপকার করার জন্য আগ্রহী থাকতেন। শেখ রাসেলের সাধারণ মানুষের প্রতি ছিল গভীর ভাবে ভালোবাসা। শেখ রাসেলের সকল আচার আচরণের মধ্যে সরলতা এবং ভালো কর্মকান্ড এবং দায়িত্ববোধ বোঝা যেত। শেখ রাসেলের ছোটবেলার এক সুন্দর কাহিনী শুনুন। ৩২ নম্বর বাসার
পাশের বাড়িতে একটি ছোট বাচ্চা ছিল তার নামও ছিল রাসেল। শেখ রাসেল সেই বাচ্চার সঙ্গে খেলাধুলা করত। আর সেই সময় শেখ রাসেল দেখল, তার পাশের বাসায় একটি বয়স্ক মহিলা ভিক্ষা করতে এসেছিল।
 আরো পড়ুনঃ রচনা আমার মা
সেই বাড়ি থেকে বলা হল, ভিক্ষা দেব না তুমি যদি বাড়ির একটা কাজ করে দাও তাহলে তোমাকে এক টাকা দিব। তারপর বয়স্ক মহিলাটি সেই কাজ করে দিল কিন্তু তাকে শুধু ২৫ পয়সা দেওয়া হয়েছিল। তারপর সেই বয়স্ক মহিলাটি কান্নাকাটি করতে করতে সেই বাসা থেকে বেরিয়ে আসলো। আর সেই অবস্থা দেখে শেখ রাসেলের অনেক কষ্ট হল। তারপর শেখ রাসেল সেই বয়স্ক মহিলাটিকে পরম যত্নে তুলে এনে তার গেটের সামনে বসিয়ে দিল। এবং সে বলল আপনি এখানে বসুন আমার আব্বা আসুক সে ,বঙ্গবন্ধু আসলে কথা বলিয়ে দিবে। 
আরো পড়ুনঃ রচনা আমাদের বিদ্যালয়
সে বয়স্ক মহিলাটিকে বলল আপনি এখানে বসুন আমার আব্বা আসুক তিনি আপনার বিচার করে দিবেন। এবং বাসা থেকে সেই বয়স্ক মহিলাটিকে খাবারও দেওয়া হয়েছিল। আর সে সময় ছিল অনেক শীত বয়স্ক মহিলাটি ঠান্ডায় থরথর করে কাঁপছিল। তারপরেও শেখ রাসেলের একই কথা যে আমার আব্বা এসে আপনার বিচার করে দিবে। আর এই গল্প থেকে বোঝা যায় যে, তার অল্প বয়স থেকে মানুষের প্রতি ভালোবাসা। আর তাই বাঙালি জাতি যতদিন থাকবে ততদিন শেখ রাসেল তাদের হৃদয়ে থাকবে।

উপসংহারঃ

শেখ রাসেল হল আমাদের বাঙালি জাতির একজন যুগোত্তীর্ণ । শেখ রাসেলের মধ্যে দিয়ে আমাদের বাঙালি জাতি তার ছোটবেলার দিনগুলোর কথা মনে রাখতে পারে।এবং ছোটবেলার স্মৃতিতে ফিরে যাই। আর তার সঙ্গে আমাদের মনে পড়ে যায় সেই নিষ্পাপ শেখ রাসেলের মৃত্যুর নির্মম ইতিহাস যা আমাদের বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে ওঠে ।দোষ তো ছিল না কিছুই তার কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে তাকে ছোটবেলায় শহীদ হতে হয়। আর তার স্মৃতি আমাদের মনের মধ্যে সব সময় বিরাজমান থাকবে। আর তার জন্য তার স্মৃতিতে বাংলাদেশে গঠন করা হয়েছে বিভিন্ন, শেখ রাসেল শিশু পার্ক,ক্রীড়া চক্র, শেখ রাসেল শিশু পরিশোধ ইত্যাদি। আর এই সকল কিছুর মধ্যেই শেখ রাসেল আমাদের মধ্যে আজীবন বেঁচে থাকবে।

শেষ কথা

এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।শেখ রাসেল রচনা - শেখ রাসেল রচনা ১০০ শব্দ এরকম আরো অনেক নতুন নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url