কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন - কমলার খোসা গুড়া করার উপায়


কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন - কমলার খোসা গুড়া করার উপায়

পোস্ট সূচিপত্রঃ কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন - কমলার খোসা গুড়া করার উপায়

ভূমিকা

এই আর্টিকেলে কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন, কমলার খোসা গুড়া করার উপায় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি প্রতিটা পয়েন্ট বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। তাহলে আপনি অনায়াসে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন

কমলার খোসা আমাদের ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। কমলার খোসা তে যে উপকারী এসিড রয়েছে তা আমাদের ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে এবং উজ্জ্বলতা বাড়াতে ভীষণভাবে সাহায্য করে। এছাড়াও কমলার খোসাতে রয়েছে এন্টি ফাঙ্গাস, এন্টি মাইক্রোবিয়াল এবং এন্টি ইনফ্লেমেটরি এসকল উপকারী উপাদান কমলার খোসার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। সেজন্য আমাদের ত্বকের ব্রণের সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করে ব্রণ মুক্ত করতে সাহায্য করে।
ব্রণ কমার সাথে সাথে ত্বকর আরো বিভিন্ন উপকার হয়ে থাকে। কিন্তু এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না জানায় কমলার খোসা ব্যবহারের পরেও ত্বক ভালো হয় না ।তাই আজ আমি আপনাদের কমলার খোসা দিয়ে কিভাবে ঠিকমতো রূপচর্চা করবেন ও ত্বককে সুন্দর করবেন সে বিষয়ে ভালোভাবে জানে।

কমলার খোসা দিয়ে আপনারা বিভিন্ন উপায়ে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন। আজ আমি আপনাদের সাথে কমলার খোসা ত্বকে ব্যবহার কিভাবে করবেন, সেজন্য কমলার খোসা দিয়ে তিনটা প্যাক তৈরি করার নিয়ম জানাবো। যা আপনাদের ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করবে। জেনে নিন রূপচর্চার জন্য কমলার খোসার ব্যবহার।

(১) প্যাক তৈরির নিয়ম

একটি কমলার খোসা নিয়ে পাটায় বেটে অথবা ব্লেন্ডার করে নিন। এরপর সেখান থেকে দুই চামচ কমলার পেস্ট একটি পরিষ্কার পাত্রে নিয়ে নিন, তার সঙ্গে এক চামচ বেসন এবং চার চামচ দুধ ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন। ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে পাঁচ মিনিট রেখে দিন, ৫ মিনিট পর প্যাকটি ভালোভাবে ত্বকে লাগিয়ে নিন। এরপর 20 মিনিটের জন্য প্যাক টি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে হালকা হাতে ঘষে ঘষে দুই থেকে তিন মিনিট মাসাজ করার পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন ।এভাবে আপনারা সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করবেন দেখবেন কিছুদিন ব্যবহারে আপনাদের ত্বকের পরিবর্তন হয়েছে। এভাবে ব্যবহারে আপনার ত্বকের ব্রণের সমস্যা দূর হবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি হবে।

(২) প্যাক তৈরির নিয়ম

আপনারা একটি পরিষ্কার পাত্র নিয়ে নিন। এরপর সেই পাত্রের মধ্যে হাফ চামচ জাফরান এবং হাফ কাপ হালকা কুসুম গরম দুধ নিয়ে জাফরান ভিজিয়ে রাখুন 15 মিনিটের জন্য। এবার দুই চামচ কমলার খোসা গুরা এবং হাফ চামচ মধু নিয়ে সেই জাফরান মেশানো দুধের মধ্যে মিশিয়ে দিন। এবার দুই মিনিট ভালোভাবে নাড়তে থাকুন এমন ভাবে মেশাবেন যেন ক্রিমের মত হয়ে যায়। এবার প্যাকটি দশ মিনিটের জন্য নরমাল ফ্রিজে রেখে দিন, শীতের দিন হলে ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন নেই। শুধু ১০ মিনিট বাইরে রেখে দিবেন।
এই প্যাকটি আপনারা হাত-পা মুখ সব জায়গায় লাগাতে পারবেন। এবার আধা ঘন্টার জন্য প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ,তারপর যখন শুকিয়ে যাবে তখন হাতে হালকা পানি নিয়ে ঘষে ঘষে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। এভাবে আপনারা সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করবেন আপনাদের ফেসিয়ালের করার দরকার হবে না। এভাবে ব্যবহারে আপনাদের ত্বকের কালো দাগ অথবা মেস্তার দাগ থাকলেও অনায়াসে দূর হয়ে যাবে। তাই প্রাকৃতিক যে কোন জিনিস ব্যবহারে আপনারা ধৈর্যের সহিত ব্যবহার করে দেখবেন পারমানেন্ট ত্বক ভালো থাকবে। বাইরের প্রোডাক্ট গুলো ব্যবহার করলে কিছুদিন পর আবার যেমন ছিলেন তেমনি হয়ে যাই।

(৩) প্যাক তৈরির নিয়ম

একটি বাটিতে দুই চামচ এলোভেরা জেল এবং এক চামচ কমলার খোসার পেস্ট এবং হাফ চামচ অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে ত্বকে সুন্দরভাবে লাগিয়ে নিন। তারপর ২৫ মিনিটের জন্য প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ২৫ মিনিট পর ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে আপনারা সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ দিন ব্যবহার করতে পারবেন। এভাবে ত্বকে কমলার খোসা ব্যবহার করলে আপনাদের ত্বক অনেক নরম এবং গ্লোয়িং হবে। তাই আপনারা এভাবে কমলার খোসা নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।

(৪) প্যাক তৈরির নিয়ম

একটি পাত্রে দুই চামচ মুলতানি মাটি, এক চামচ কমলার খোসা গুড়া এবং চার চামচ গোলাপ জল ভালো করে মিশিয়ে নিন। ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে ১০ মিনিটের জন্য রেস্টে রেখে দিন। দশ মিনিট পর ত্বকে 20 মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন এভাবে ব্যবহার করলে আপনার ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার হবে এবং ত্বকের কালো দাগ দূর করবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনবে।

কমলার খোসা গুড়া করার উপায়

শীত শুরু হবার সাথে সাথে চারিদিকে কমলার সীজিন শুরু হয়ে যায়। আর সেই সময় চারদিকে কমলার ছড়াছড়ি পড়ে যায়। আর তখন আমরা অনেক কমলা খেয়ে থাকি এবং খোসাগুলো ফেলে দিই।কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই জানে না কমলার গুণাগুণ সম্পর্কে তাই আপনারা জানলে কমলার খোসা আর ফেলে দিবেন না সারা বছরের জন্য জমিয়ে রাখবেন। আর সারা বছর কিভাবে জমিয়ে রাখতে পারেন সেই আলোচনাই করব। আর আপনি যদি কমলার খোসা সংরক্ষণ করার নিয়ম জানতে পারেন তাহলে আপনারা সারা বছরের জন্য কমলার সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন।
কিছু কমলার খোসা একত্রে জমা করে ছোট ছোট টুকরা করে কেটে নিয়ে একটি প্লেটে শুকাতে দিন। এরপর দুইদিন টানা রোদে শুকিয়ে একদম মচমচে হয়ে গেলে রোদ থেকে উঠিয়ে নিন। এরপর কিছু মসুরের ডাল এবং কমলার খোসা গুলো ভালোভাবে ব্লেন্ডার করে গুঁড়ো করে নিন। তারপর একটি চালনি দিয়ে ভালোভাবে চেলে নিন। ভালোভাবে চালার পর একটি কাঁচের কোটায় ভালোভাবে রেখে দিন। এরপর আপনার যখন ব্যবহারের প্রয়োজন হবে তখন আপনি কোটা থেকে বের করে ব্যবহার করবেন এবং ভালোভাবে কোটার মুখ লাগিয়ে রাখবেন। নরমাল ফ্রিজে রাখলে বেশি ভালো এতে নষ্ট হবার কোন ভয় থাকেনা।

শেষ কথা

এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন এরকম আরো অনেক নতুন নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url