চিরতরে মেছতা দূর করার উপায় - মেছতা দূর করার ঘরোয়া উপায়
পোস্ট সূচিপত্রঃ চিরতরে মেছতা দূর করার উপায় - মেছতা দূর করার ঘরোয়া উপায়
ভূমিকা
এই আর্টিকেলে চিরতরে মেছতা দূর করার উপায় ,মেছতা দূর করার ঘরোয়া উপায়,মেস্তা
হওয়ার কারণ জেনে নিন বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি প্রতিটা পয়েন্ট
বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন প্রথম
থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। তাহলে আপনি অনায়াসে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে
যাবেন।
চিরতরে মেছতা দূর করার উপায়
অনেক সময় আমাদের ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় দেখা দেয় যেমন চোখের নিচে, কপালে,
গালে, ঠোটের নিচে, ঘাড়ে ইত্যাদি মেছতা দেখা দিতে পারে। মেছতার কারণে আমাদের
চেহারার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। আর তখন আমাদের নিজেকেই নিজের চেহারা দেখতে ভালো
লাগে না। আর মেজদা দূর করার জন্য আমরা তখন বিভিন্ন রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে
থাকি।অনেক সময় জেনে আবার অনেক সময় ।
আরো পড়ুনঃ কোরিয়ানদের মতো ফর্সা হওয়ার উপায়
অনেক সময় ভুল উপায়ে মেছতা দূর করতে গিয়ে আমাদের চেহারার বারোটা বাজিয়ে ফেলী।
আর এই সকল উপায় গুলো অবলম্বন করতে গিয়ে মেছতা দূর হবার বদলে আরো বেশি বেড়ে
যায়।শুধু মেছতা নয় স্কিনের যে কোন ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আপনাদের জেনে বুঝে ও
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মেস্তার ট্রিটমেন্ট করাটাই প্রয়োজন। এতে আপনাদের
মুখের মেছতা চিরতরে দূর হতে পারে।
মেস্তা হওয়ার কারণ জেনে নিন
সাধারণত আমাদের ত্বকে বা স্কিনে মেলানোসাইট সেল বা কোষ থাকে আর এর একমাত্র কাজ
হচ্ছে মেলানিন নামক একটি পদার্থ তৈরি করা। এই মেলানিন পদার্থ দ্বারা আমাদের ত্বক
অনেক সময় কালো অনেক সময় ফর্সা দাগ দেখা দেয় এটি মেলানিনের জন্যই হয়ে থাকে।
যাদের স্কিনে বেশি পরিমাণে মেলা নিন রয়েছে তাদের ত্বক বেশি কালো বা শ্যামলাব
বর্ণের হয়, আর যাদের স্কিনে মেলানিন এর পরিমাণ কম থাকে তাদের ত্বক ফর্সা হয়।
যখন আমাদের ত্বকে মেস্তা বা বিভিন্ন দাগ দেখা দেয় তখন বুঝতে হবে যে আমাদের
ত্বকের কোষে মেলানিন এর পরিমাণ বেড়ে গেছে। অনেক মানুষ আছে যে মেছতাকে ফাঙ্গাল
ইনফেকশন মনে করে, কিন্তু আসলে এটা ফাঙ্গাল ইনফেকশন নয় আবার অনেকে ইনফেকশন বলে
ত্বকে এন্টিফাঙ্গাল ক্রিম বা অন্য কিছু ব্যবহার করেন এতে ত্বকের ক্ষতি হবে।
আমাদের শরীরের সব জায়গা ঢাকা থাকলেও মুখ সবসময় খোলা থাকে।
আরো পড়ুনঃ অলিভ অয়েল মুখে লাগানোর উপকারিতা
এর ফলে সূর্যের রশি সরাসরি আমাদের মুখে এসে লাগে এর ফলে আস্তে আস্তে মেছতা বেড়ে
যেতে পারে। আবার অনেকের রান্না করার জন্য সব সময় চুলার তাপে বসে থাকতে হয়, এর
ফলে এখান থেকেও মেছতা তৈরি হতে পারে। আবার অনেক সময় গর্ভবতী মহিলাদের মেছতা হতে
দেখা যায়, এতে আপনাদের চিকিৎসা করার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ বাচ্চা হবার পর
মেছতা ভালো হয়ে যায়, আর যদি দেখেন ভালো হচ্ছে না অনেক সময় পার হয়ে যাওয়ার
পরও তাহলে সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
চিরতরে মেছতা দূর করার উপায়
মলম বা ক্রিম ব্যবহারঃ আপনার যে সকল স্থানে মেছতা দেখা দিয়েছে সে সকল
স্থানে ক্রিম অথবা মলম ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহারের আগে আপনি অবশ্যই ডাক্তারের
পরামর্শ নিয়ে নিবেন।কারণ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে এতে
ক্ষতি হবে। একেক জনের স্কিন একাদ রকম সবার মুখে সব ক্রিম বা মলম শুট করবে না, এ
ক্ষেত্রে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তাই ক্রিম বা মলম ব্যবহারের আগে
ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। তারপর ডাক্তার যতদিন প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী
ব্যবহার করতে বলে সেই অনুযায়ী ব্যবহার করলে মেছতা চিরতরে দূর হয়ে যাবে।
লেজার পদ্ধতিঃ অনেক সময় দেখা যায় লেজার পদ্ধতি করার মাধ্যমে চিরতরে
মেস্তা দূর করা সম্ভব। কিন্তু লেজার পদ্ধতি একটু ব্যয়বহুল হওয়ার জন্য সবার
পক্ষে এটি সম্ভব হয় না। আর যদি আপনারা পারেন তাহলে লেজার পদ্ধতি করার মাধ্যমে
আপনাদের ত্বক থেকে মেছতা দূর করতে পারেন। অনেকে ব্যয়বহুল হলেও মনে করেন যে
কিভাবে ত্বক সুন্দর বা ম্যাচটা দূর করা যায় সে ক্ষেত্রে আপনারা এই লেজার পদ্ধতি
নিতে পারেন। সবচেয়ে ভালো আপনি যদি প্রাকৃতিক উপায়ে মেছতা দূর করতে পারেন কারণ
প্রাকৃতিক উপায়ে মেছতা দূর করার ক্ষেত্রে কোন ভয় থাকে না স্কিন খারাপ হবার।
মেছতা দূর করার ঘরোয়া উপায়
আমরা যে কোন উপায়ে মেছতা দূর করি না কেন সবচাইতে ভালো পদ্ধতি হল প্রাকৃতিক
উপায়ে মেজদা দূর করা। এই উপায়ে মেছতা দূর করতে আমাদের তেমন খরচ হয় না। স্কিনে
কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না ,এবং স্কিনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা
একেবারেই নেই। প্রাকৃতিক উপায়ে মেছতা দূর করতে আপনাদের ডাক্তারের পরামর্শ
নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এটা আপনারা নিজের ইচ্ছা মতই করতে পারেন। কিন্তু ব্যবহারের
সঠিক নিয়ম জানা লাগবে তাহলেই আপনারা প্রাকৃতিক উপায়ে মেছতা দূর করতে পারবেন।
কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন যে কোন প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করলে ধৈর্যের সহিত
করতে হবে। ধৈর্যের শহিত ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাবেন।
আরো পড়ুনঃ কপালে নতুন চুল গজানোর উপায়
হলুদঃ হলুদ মানে আমরা বুঝি মসলা, কারণ হলুদ তো সচরাচর তরকারিতে ব্যবহার করে। কিন্তু
হলুদ আমাদের ত্বকের মেছতা দূর করতে ভীষণ কার্যকরী। হলুদের রয়েছে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বকের মেছতা দূর করতে সাহায্য করে। সেজন্য হলুদ
ভালোভাবে বেটে অথবা ব্লেন্ডার করে নিয়ে সন্ধ্যার পর যেখানে যেখানে মেছতা রয়েছে
,সেখানে লাগিয়ে রাখুন।২০ মিনিট পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন এভাবে কিছুদিন ব্যবহার
করলে, আপনার ত্বকের মেছতা দূর হয়ে যাবে। হলুদ রোদ থাকা অবস্থায় ব্যবহার করবেন
না এতে ত্বকের অনেক ক্ষতি হবে।
লেবুর রসঃ আমরা জানি লেবুর রস রূপচর্চার কাজে অনেক প্রয়োজন হয়। লেবুতে যে উপকারী এসিড
রয়েছে তা ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। এক চামচ লেবুর রস এবং এক চামচ বেসন ও
পরিমাণমতো গোলাপ জল দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে। ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিটের জন্য
রেখে দিন। বিশ মিনিট পর ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এভাবে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন
নিয়মিত ব্যবহার করলে মেছতা চিরতরে দূর হয়ে যাবে।
গরুর
দুধঃ আমরা জানি
গরুর দুধের প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণ রয়েছে এটি আমাদের শরীরের জন্য
ভীষণ উপকারী। তার পাশাপাশি এটি ত্বকের জন্য অনেক ভালো। ৫ চামচ গরুর দুধ এবং এক
চামচ আটা বা ময়দা ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে পনেরো মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন
।এবার পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এভাবে ব্যবহারে মেছতা দূর হবে।
মধুঃ মধুতে রয়েছে সকল রোগের শেখা। আর সেজন্য ত্বকে মধু ব্যবহার করলে মেছতা খুব
তাড়াতাড়ি দূর হয়ে যাবে, এক চামচ মধুর সঙ্গে এক চামচ এলোভেরা জেল ভালোভাবে
মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে মেছতা দূর হয়ে যেতে সাহায্য করবে।
পাকা পেঁপেঃ আমরা সচরাচর পাকা পেতে খেয়ে থাকি। পাকা পেপেতে যে ভিটামিন ই
রয়েছে তা আমাদের মেছতা দূর করতে সাহায্য করে। তার পাশাপাশি ত্বকের ত্বকের
উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তোলে। ২ চামচ পেঁপের সঙ্গে এক চামচ লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে
ত্বকে এপ্লাই করুন। এবার ১৫ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এভাবে
আপনারা সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করবেন চিরতরে মেছতা দূর হবে।
এলোভেরা জেলঃ
রূপচর্চার কাজে এলোভেরা জেল অনেক ব্যবহার হয়ে থাকে। এলোভেরা জেল আমাদের ত্বকের
জন্য ভীষণ উপকারী একটি উপাদান। অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে এক চামচ টমেটো রস মিশিয়ে
বিশ মিনিট শুকিয়ে নিন, শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মাসাজ করে ত্বক ধুয়ে
ফেলুন এভাবে আপনারা সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করে দেখুন ভালো ফলাফল
পাবেন।
টমেটোঃ টমেটো মেছতা দূর করতে সবচেয়ে বেশি উপকারী। টমেটোতে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
রয়েছে তা আমাদের ত্বকের মেছতা দূর করতে ভীষণ উপকারী। চার চামচ টমেটোর রস এবং হাফ
চামচ ময়দা এর সঙ্গে মিশিয়ে তার সাথে হাফ চামচ অলিভ অয়েল দিয়ে ২০ মিনিটের জন্য
ত্বকে লাগিয়ে রাখুন এভাবে ব্যবহার করলে মেছতা খুব তাড়াতাড়ি দূর হয়।
মুলতানি মাটিঃ
মুলতানি মাটি কে অনেকে ফেসিয়াল প্যাক বলে থাকে। কারণ মুলতানি মাটি ত্বকে ব্যবহার
করলে ত্বক ভিতর থেকে পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। এক চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে হাফ
চামচ মধু এবং পরিমাণ মতো গোলাপজল দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার ১৫ মিনিটের
জন্য ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। যখন দেখবেন হালকা টানটান অনুভব হচ্ছে, তখন আপনারা কথা
বলবেন না তাহলে চামড়া কুঁচকে যেতে পারে। এরপর ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন এভাবে
আপনারা সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করবে মেছতা অনায়াসে দূর হয়ে যাবে ।
আলুর রসঃ
আলুর রস আমাদের চোখের নিচের এবং বিভিন্ন জায়গার দাগ দূর করতে ভীষণভাবে সাহায্য
করে। যদি আপনাদের ত্বকে মেছতার দাগ দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই আপনি নিয়মিত আলো
গ্রেটারে গ্রেড করে যেখানে যেখানে মেছতার দাগ রয়েছে সেখানে ২০ মিনিটের জন্য
লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ত্বক ধুয়ে ফেলুন আপনারা এভাবে প্রতিদিন ব্যবহার করে
দেখুন, দেখবেন আপনার মেছতার দাগ চলে যাবে আর যদি, কারো চোখের নিচে কালো দাগ থাকে
তাহলে অবশ্যই এভাবে আলু ব্যবহার করে দেখবেন ভালো ফল পাবেন।
আরো পড়ুনঃ আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
টক দইঃ
টক দই আমাদের স্কিনের জন্য ভীষণ উপকারী। থাকা ব্যাকটেরিয়া আমাদের ত্বক ভিতর থেকে
ক্লিন করতে সাহায্য করে। আর ত্বক যখন ভেতর থেকে পরিষ্কার থাকে তাহলে মেছতা হবার
ভয় থাকে না। তিন চামচ টক দই ভালোভাবে ফেটিয়ে তার সঙ্গে এক চামচ মধু দিয়ে
ভালোভাবে মিশিয়ে যেখানে যেখানে মেছতার দাগ রয়েছে, সেখানে লাগিয়ে রাখুন৩০
মিনিটের জন্য। তিরিশ মিনিট পর ত্বক ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
,শীতের সময় হলে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুবেন ।
চিয়া সিডঃ চিয়া সিড আমাদের ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। ২ চামচ চিয়া সিড হাফ কাপ পানির
মধ্যে ৬ ঘন্টার জন্য ভিজিয়ে রাখুন। 6 ঘন্টা পর চিয়া সিড এর সঙ্গে হাফ চামচ
লেবুর রস এবং এক চামচ ময়দা ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে এপ্লাই করুন, এবার 30 মিনিটের
জন্য ত্বকে লাগিয়ে রাখুন।৩০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন আপনি এভাবে ব্যবহার করে
দেখবেন আপনার ত্বকের মেছতা দূর হবে।
শসাঃ ২ চামচ শসা গ্রেট করে নিন অথবা কুচিয়ে নিন এরপর শসার সঙ্গে এক চামচ বেসন এবং এক
চামচ গোলাপ জল ভালোভাবে মিশিয়ে যেখানে মেছতার দাগ রয়েছে সেখানে লাগিয়ে রাখুন।
20 মিনিট পর ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন, এভাবে আপনারা সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন
ব্যবহার করবের আপনাদের মেছতা আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে।
শেষ কথা
এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই
ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।চিরতরে মেছতা দূর করার উপায় এরকম আরো অনেক নতুন
নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে
শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।