পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় - অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ

প্রিয় পাঠক, আপনি পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় জানার জন্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন ।কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। আমি স্টেপ বাই স্টেপ মেয়েদের মাসিক নিয়ে জানানোর চেষ্টা করব। আপনি যদিপিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় ও  অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ বিস্তারিত আরো অনেক বিষয় জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি  শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের  সদুত্তর পেয়ে যাবেন। 
পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় - অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ

পোস্ট সূচীপত্রঃ পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় - অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ 

ভূমিকা

এই আর্টিকেলে পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয়,অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ, ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি প্রতিটা পয়েন্ট বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। তাহলে আপনি অনায়াসে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয়

পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। অনেকে এই সমস্যায় ভুগবেন যে পিল খাওয়ার পর ও মাসিক হয় না কেন,আবার অনেকে ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার পর ও মাসিক হবার সময় পার হয়ে যায় কিন্তু মাসিক হয় না। এক্ষেত্রে আপনারা অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। আজ আমি আপনাদের এ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব, আজকে আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় কি। কেন নিয়মিত মাসিক হয় না, এ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব এবং আপনাদের সুন্দরভাবে বুঝানোর চেষ্টা করব। তাই আপনি অনেক মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন তাহলে অবশ্যই আপনি এই বিষয়টি সুন্দরভাবে বুঝতে পারবেন।

ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম

আপনাদের জেনে রাখতে হবে যে ইমারজেন্সি পিল একটি হরমোনাল ওষুধ। এই ইমারজেন্সি পিল ডিম্বানু থেকে ডিম্বাশয় গুলোকে নিঃসরণ করে অর্থাৎ অবলেশনের প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেয় বা এবং ডিম্বাশয় গুলোকে জরায়ুতে প্রতিস্থাপিত হতে বাধা দেয়। যাদের জরায়ুতে ডিম্বানু গুলো অবলেশন হয়ে গেছে অথবা নিষিত্ত ডিম্বাণু জরায়ুতে প্রতিস্থাপিত হয়ে গেছে সেক্ষেত্রে এই ওষুধ কোন কাজ করবে না।

অপরিকল্পিত এবং অনিরাপদ সহবাসের তিন দিনের মধ্যে এই ইমারজেন্সি ফিলটি সেবন করতে হবে। আর এই ফিলটি আপনারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেবন করার চেষ্টা করবেন। কারণ এই পিলটি যদি আপনার খেতে বেশি দেরি হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ও গর্ভধারণের ভয় থেকে যায়। কারণ যত তাড়াতাড়ি খাবেন তত বেশি ভালো কাজ করবে। আর একটি ইমারজেন্সি পিল ঋতু চক্রে একবারই সেবন করা যাবে।
আপনারা কোন সময় ইমার্জেন্সি পিল নিয়মিত সেবন করবেন না কারণ এই ইমারজেন্সি পিল বাচ্চা ধারণের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। আপনারা যদি নিয়মিত ইমারজেন্সি পিল খান তাহলে আপনাদের জরায়ু পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এর ফলে আপনি কোনদিনও মা হতে পারবেন না বা গর্ভধারণ করতে পারবেন না। গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত ইমারজেন্সি পিল সেবনের জন্য জরায়ুতে ক্যান্সার সৃষ্টি হয় এক্ষেত্রে আপনারা ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।

পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ

পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার অনেক রকমের অথবা বিভিন্ন রকমের কারণ থাকতে পারে। প্রতিবারই নিয়মিত পিল খাওয়ার পর যে মাসিক হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। যদি আপনারা পিল নিয়মিত খান কিন্তু মাসিক হয় না এক্ষেত্রে হয়তো পিল আপনাদের শরীরে কোন কাজ করেনি এতে গর্ভধারণের জন্য মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আবার অনেক সময় পিল সেবনের জন্য ৪থেকে ১০ দিন সময় পিছিয়ে যেতে পারে সে ক্ষেত্রে আপনাদের দেরিতে হলেও মাসিক হয়। এছাড়াও শরীরে বিভিন্ন সমস্যা থাকলে অথবা শারীরিক কোনো সমস্যা আবার শরীরে রক্ত কম থাকলে পিল খাওয়ার পরও মাসিক না হতে পারে।
  • আপনারা নিয়মিত পিল খাওয়ার পরও যদি দেখেন যে আপনাদের মাসিক নিয়মিত হচ্ছে না তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • মাসিক হওয়ার পর ১০ দিন পার হয়ে গেলেও যদি মাসিক বন্ধ না হয় সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • আপনাদের পেটে যদি তীব্র ব্যথা করে তিন থেকে পাঁচ সপ্তাহ ধরে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • পিল খাওয়ার দুই থেকে তিন ঘন্টার মধ্যে যদি বমি হয়ে যায়।
  • তিন সপ্তাহের মধ্যে মাসিক না হলে।

পিল খাওয়ার পরও যদি আপনাদের মাসিক না হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন ট্যাবলেট খেতে পারেন। যা আপনাদের শরীরের রক্তশূন্যতার মত রোগ থেকে রেহাই দিবে। যদি আপনাদের সবকিছু ঠিক থাকার পরেও যদি পিল খাওয়ার পর মাসিক না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আপনাকে ওষুধ খেতে হবে অথবা যে কোন ব্যায়াম করতে হবে। কারণ অনেক সময় ব্যায়াম করার মাধ্যমে এ সকল সমস্যা গুলো দূর হতে পারে।

অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ

যেকোনো বিবাহিত এবং অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক অনিয়মিত হয় তাহলে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যে আপনার মাসিক কিভাবে হচ্ছে এবং অনেক সময় মাসিক সময়ের তিন থেকে পাঁচ দিন আগে পরে হতে পারে এটা কোন সমস্যা নয় ।আর যদি আপনারা দেখেন যে এর চাইতেও বেশি সময় ধরে আপনাদের মাসির হচ্ছে না সে ক্ষেত্রে আপনারা যে কোন ব্যবস্থা নিতে হবে।

যদি আপনি দেখেন আপনার মাসিক ১০ তারিখে হওয়ার কথা কিন্তু পাঁচ দিন পার হয়ে যাবার পরও মাসিক হচ্ছে না সে ক্ষেত্রে আপনাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আর প্রতিটা মায়ের উচিত অবিবাহিত মেয়েদের অথবা প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের মাসিক ঠিকমতো হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা।
যাদের নিয়মিত মাসিক হয় এটা ধরে নেয়া যায় যে তাদের প্রতি মাসে ডিম বাসায় থেকে ডিম আসে। আল্লাহতালা এভাবেই মেয়েদের পৃথিবীতে সৃষ্টি করেছে। আর এই সকল মেয়েদের দাঁড়ায় পৃথিবীতে আর মানুষ জন্ম নেয়। প্রতিটা নারীর এখনকার সময়ে অনিয়মিত মাসিক দেখা যায় কারণ এখনকার নারীদের শরীরে ভিটামিন এবং রক্ত কম থাকার কারণে এ সকল সমস্যা গুলো বেশি দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনাদের যে সকল কাজগুলো করতে হবে।

সুষম খাদ্য গ্রহণঃ আপনাদের শরীরে যদি সুষম খাবারের অভাব হয় অথবা পুষ্টিকর খাবার কম খান তাহলে অবশ্যই আপনাদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ এর ফলে আপনাদের শরীরে রক্তশূন্যতা এবং ক্যালসিয়ামের অভাব হয়, তাই প্রতিটা নারীর প্রতিদিন সুষম এবং পুষ্টিকর ও ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন। যেমন শাক-সবজি, মাছ, মাংস, ফল আপনারা যদি এ সকল পুষ্টিকর খাবারগুলো নিয়মিত খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনারা অনিয়মিত মাসিক থেকে মুক্তি পাবেন। কারণ এখনকার ইয়াং জেনারেশনের মেয়েরা ফল এবং শাকসবজি খেতে চায় না। এর ফলে এ সকল সমস্যা বেশি দেখা দেয়।

ওজন বৃদ্ধিঃ যখন মেয়েদের ওজন আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে, সেক্ষেত্রে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় চর্বি জমতে শুরু করে। অনেকের জরায়ুতে অতিরিক্ত চর্বি জমার ফলে জরায়ুর মুখ বন্ধ হয়ে যেতে থাকে এর ফলে মাসিক ঠিকমতো হতে পারে না। ওজন বেশি হলে শরীরে আরো বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন আপনাদের হাইট অনুযায়ী যদি আপনাদের ওজন বেশি হয় সেক্ষেত্রে আপনাদের শরীরের ওপর এক প্রকার প্রেসার পরে এক্ষেত্রে আপনাদের অনিয়মিত মাসিক হতে থাকে। তাই প্রতিটা মেয়ের উচিত তাদের ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। কারণ মেয়েদের ওজন বেশি হলে তাদের শারীরিক সমস্যা সঙ্গে সঙ্গে তাদের চেহারা নষ্ট হয়ে যায়।

নিয়মিত পানি পান করাঃ পানি আপনাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ থেকে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শরীরে যদি পানির ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে আপনাদের শরীরে ইউরেটরে ইনফেকশন তৈরি হয়। এই ইনফেকশনের ফলে জরায়ু ফুলে যায় এবং জরায়ুর মুখ ছোট হয়ে যাই, জরায়ুতে প্রচুর জ্বালাপোড়া করে, জরায়ু ব্যথা হয় এর ফলে আপনাদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে ।তাই আপনারা প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচ লিটার পানি খাওয়ার চেষ্টা করবেন কারণ পানি সব রোগের মহা ঔষধ।

জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিঃ মাসিক যদি নিয়মিত না হয় এটার একটি বড় কারণ হলো জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপনি যদি পিল খেয়ে থাকেন তাহলে অনেক সময় মাসিক অনিয়মিত হয়ে যায় । আপনি যদি নিয়মিত পিল খান তার পরেও মাসিক না হয় তাহলে আপনি লাল পিল খেতে শুরু করেন লাল পিল খাওয়ার পরও যদি মাসিক না হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
ইমারজেন্সি পিলঃ আপনারা যদি ইমারজেন্সি পিল নিয়মিত খেয়ে থাকেন অথবা ঋতুচক্র অনুযায়ী এক মাসে একবারই ইমারজেন্সি পিল খাওয়া যাবে। যদি আপনারা এক মাসে দুই বার ইমার্জেন্সি পিল খান এক্ষেত্রে আপনাদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে যাবে। আর ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার ফলে যদি পাঁচ থেকে ছয় দিন আগে ও পরে মাসিক হয়। তাহলে এটা কোন ক্ষতি হবে না। আর এর চাইতেও যদি বেশিদিন মাসিক না হয় তাহলে আপনাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

শেষ কথা  

এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় - অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ এরকম আরো অনেক নতুন নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url