ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জেনে নিন
প্রিয় পাঠক আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জানার জন্য অনেক জায়গায়
খোঁজাখুঁজি করছেন কিন্তু কোথাও এর সদুত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না।আমি আপনাকে স্টেপ বাই
স্টেপ ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জানানোর চেষ্টা করব ।যদি আপনিড্রাইভিং
লাইসেন্স করার নিয়ম সঠিক রূপে জানতে চান । তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে পড়তে থাকুন আপনি আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে
যাবেন।
প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলে শুধু ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম নিয়েই আলোচনা করা
হয় নাই এছাড়াও আরো অনেক পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । সেগুলো যদি আপনি
বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ ও গুরুত্ব সহকারে
পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জেনে নিন
- ভূমিকা
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া
- লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রকৃতি ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া
- ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া
- ডুবলিকেট লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া
- শেষ কথা
ভূমিকা
আজকাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করা নিয়ে অনেকেই ভাবছেন কিভাবে করব? কার কাছে যাবো
।রাস্তাঘাটে প্রতিনিয়তই পুলিশ সার্জেন্ট গাড়ি ধরে মামলা দেয় । সেটা কিন্তু
আমাদের ভালোর জন্যই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী করে থাকে তাই আমাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স
তৈরি করে লাইসেন্স নিয়ে আমাদের গাড়ি চালানো উচিত। তাই আসুন এই আর্টিকেলে
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ও ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া নিয়ে
বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স
- ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হলে প্রথমে লার্নার বা শিক্ষানবিশ লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।
- ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার জন্য আবেদনকারীর যে যোগ্য থাকতে হবে তা হল কমপক্ষে শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণী পাশ হতে হবে।
- অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারী সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর হতে হবে । আর পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারী সর্বনিম্ন বয়স ২১ বছর হতে হবে।
- ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারী কে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ হতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া
ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারী কে সর্বপ্রথমে লার্নার বা শিক্ষানবিশ লাইসেন্সের
জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ অনলাইনে(bsp.brta.gov.bd)-এর মাধ্যমে আবেদন করতে
হবে। অনলাইন সিস্টেমে তাৎক্ষণিক তার লার্নার বা শিক্ষানবিশ লাইসেন্স
ইস্যু হবে এবং আবেদনকারী সাথে সাথেই অনলাইন থেকে লার্নার বা শিক্ষানবিশ লাইসেন্স
প্রিন্ট আউট করে নিতে পারবে।
লার্নার বা শিক্ষানবিশ লাইসেন্স দ্বারা ২/৩ মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর
তাকে সময় দেওয়া হবে সেমতো নির্ধারিত তারিখে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিতে
কেন্দ্রে আসতে হবে । এবং ফিল্ডে প্রাকটিক্যাল গাড়ি চালাতে পারে কি না? সে টেস্ট
পরীক্ষা দিতে হবে। এ সময় তার লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের মূল কপি
, ও লিখিত পরীক্ষার জন্য কলম সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে ।
লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
লার্নাবা শিক্ষারবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগবে
সেগুলো নিয়ে এখন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।
- আবেদনকারীকে সঙ্গে ছবি (সাইজ ১৫০ কেবি) নিয়ে আসতে হবে ।
- নির্ধারিত ফরমে অনলাইন আবেদন করতে হবে।
- লাইসেন্স ধারী অর্থাৎ রেজিস্টার্ড ভুক্ত ডাক্তারের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট যুক্ত করতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের স্ক্যানিং কপি (সর্বোচ্চ ৬০০ কে. বি)
- বিদ্যুৎ বিলের স্ক্যান কপি (সর্বোচ্চ৬০০ কে.বি) [আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা যদি ভিন্ন হয় তাহলে বর্তমান ঠিকানার ইউলিট বিল সংযুক্ত করতে হবে]
- অনলাইন আবেদন করার সময় যে কোন কাগজপত্র ভুয়া প্রমাণিত হলে তার লার্নার বা শিক্ষানবিশ লাইসেন্স ও স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করা হবে ।
- নির্ধারিত নির্ধারিত ফি , ১ ক্যাটাগরি ৫১৮/- টাকা ও২ক্যাটাগরি -৭৪৮/-টাকা পরিশোধ করতে হবে ।
মৌখিক পরীক্ষা ও লিখিত পরীক্ষা ও প্রাকটিক্যাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার
পরে পুনরায় একটি নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ নির্ধারিত ফি প্রদান
করে ,স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য অফিসে দরখাস্ত করতে হবে ।গ্রাহকের
বায়োমেট্রিক্স অর্থাৎ(ডিজিটাল ছবি , ডিজিটাল স্বাক্ষর , আঙ্গুলের ছাপ গ্রহণ করে
স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হবে । স্মার্ট কার্ড তৈরি হয়ে গেল গ্রাহককে এস এম এস এর
মাধ্যমে গ্রহণের বিষয় অবগত করা হবে।
এতক্ষণ যাবত লার্নারের কাগজপত্র সংক্রান্ত আলোচনা করলাম আশা করি আপনারা সকলেই
বুঝতে পেরেছেন যে ,কোন কোন কাগজ সংযুক্ত করতে হবে।
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি লাগবে , সেগুলো
নিয়ে এখন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব ।আপনি সেই বিষয়গুলো খুব মনোযোগ সহকারে
পড়তে থাকুন
- নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে
- রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট সংযুক্ত করতে হবে
- ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি সংযুক্ত করতে হবে
- বিআরটিএর নির্ধারিত ব্যাংকে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে , জমা দানের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে।
- পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সে- এর জন্য পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন সংযুক্ত করতে হবে
- রিসেন্ট তোলা ছবি পাসপোর্ট সাইজের সংযুক্ত করতে হবে
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রকৃতি ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া
- পেশাদার হাল্কা মোটরযানের ওজন ২৫০০ কেজি-এর নিচে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য কমপক্ষে তার বয়স ২১ হতে হবে পেশাদার মধ্যম ওজন ২৫ ০০ থেকে ৬৫০০ কেজি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবহার কমপক্ষে ০৩বছর হতে হবে।
- পেশাদার ভারী মোটরযানের ওজন ৬৫০০ এর বেশি ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য পেশাদার মধ্যম ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ব্যবহার কমপক্ষে ০৩ বছর হতে হবে
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রথমে হালকাযানের
লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে । সেই লাইসেন্সের বয়স ০৩ বছর হলে মিডিয়াম লাইসেন্স
গ্রহণ করতে হবে। সেই লাইসেন্সের বয়স পুনরায়০৩ বছর হলে এবার ভারী ড্রাইভিং
লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া
ক) পেশাদারঃ আবেদনকারী কে প্রথমে বিআরটিএর নির্ধারিত ফি মেয়াদ উত্তরণের
১৫ দিনের মধ্যে হলে৪২১২/-টাকা । মেয়াদ উত্তীর্ণের ১৫ দিনের পরে প্রতিবছর জরিমানা
৫১৮/-টাকা সহ জমা দিয়ে কাগজপত্র নির্ধারিত বিআরটিএর সার্কেল অফিসে জমা দিতে হবে
। কাগজপত্র সঠিক পাওয়া গেলে একই দিনের মধ্যে গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স(ডিজিটাল
ছবি , ডিজিটাল স্বাক্ষর ,আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণের জন্য গ্রাহককে নির্দিষ্ট
অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে । স্মার্ট কার্ড w প্রিন্টিং-এরসমস্ত কাজ শেষ
হলে হলে এস এস এর মাধ্যমে জানানো হবে ।
আরো পড়ুনঃ শীত আসার আগেই প্রস্তুতি কিভাবে নিবেন সুন্দর ভাবে জেনে নিন
আবেদনকারীকে বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি , ডিজিটাল স্বাক্ষর , আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে স্মার্ট কার্ড wপ্রিন্টিং-এর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে এ সিমের মাধ্যমে এস এম এস এর মাধ্যমে অবগত করানো হবে। আশা করি আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া ক্লিয়ার ভাবে বুঝতে পেরেছে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে
- রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট আবেদনের সাথে সাথে সংযুক্ত করতে হবে
- ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত করতে হবে
- বি আর টি এর নিজ ব্যাংকে ফি জমা দিয়ে জমাদানের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ০২ কপি ছবি সংযুক্ত করতে হবে
এতক্ষণ যাবৎ আমরা ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করলাম ।
আশা করি আপনারা সকলেই লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া বুঝতে পেরেছেন । আমরা যদি
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জেনে করি তাহলে আমাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স করা সহজ
হবে।
ডুবলিকেট লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া
ডুবলিকেট লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া যদি লাইসেন্স হারিয়ে যায় তাহলে আমরা
কিভাবে ডুবলিকেট লাইসেন্স উঠাবো সেই প্রক্রিয়ার জন্য কি কি কাগজ লাগবে তা আমরা
জেনে নিই
- নির্ধারিত ফরমে আবেদন
- জিডি কপি ও ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স
- নির্ধারিত ফি বি আর টি এর নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দিয়ে , জমা প্রদানের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে।
- রিসেন্ট তোলা এক কপি ছবি। এ সমস্ত কাগজ পত্র নিয়ে বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে জমা দিতে হবে
শেষ কথা
এই আর্টিকেলটি ও মাধ্যমে জানতে পেরেছেন ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ও ড্রাইভিং
লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া যদি আপনার কাছে এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে
তাহলে যারা ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জানেনা তাদের কাছে দয়া করে শেয়ার
করুন। আর নতুন কোন আর্টিকেল পেতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ।