বাংলা প্রবন্ধ রচনা শীতের সকাল

প্রিয় পাঠক, আপনি বাংলা প্রবন্ধ রচনা শীতের সকাল জানার জন্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। আমি স্টেপ বাই স্টেপ অবিবাহিত বাংলা প্রবন্ধ রচনা শীতের সকাল জানানোর চেষ্টা করব। আপনি যদি বাংলা প্রবন্ধ রচনা শীতের সকাল বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের সদুত্তর পেয়ে যাবেন।
বাংলা প্রবন্ধ রচনা শীতের সকাল

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলে শুধু বাংলা প্রবন্ধ রচনা শীতের সকাল সম্পর্কেই আলোচনা করা হয়েছে। যদি আপনি জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে পড়ুন। তাহলে রচনাটা সুন্দরভাবে বুঝতে পারবেন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাংলা প্রবন্ধ রচনা শীতের সকাল

ভূমিকা

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। সিরিয়াল বাই সিরিয়ালে ঋতু পরিবর্তন হয়ে নতুন নতুন রূপে সাজিয়ে তুলে বাংলাদেশে কে। একের পর এক ঋতু পরিবর্তন হয় । বিভিন্ন সৌন্দর্য নিয়ে আমাদের মাঝে পালাক্রমে ছয়টি ঋতুর আগমন ঘটে। চারিদিকে হালকা কুয়াশায় প্রকৃতির মাঝে একটি অপরূপ সুন্দর্য অনুভব করা যায়। প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে আসে শীতকাল। ভোর বেলায় হালকা ঠান্ডা অনুভব হয় এতে আমরা বুঝতে পারি আমাদের মাঝে আস্তে আস্তে শীতকাল চলে আসছে।
আর এই অনুভূতিটা শীতকাল ছাড়া পাওয়া যায় না। এই শীতকালে প্রকৃতি যেন রিক্ততার সন্ন্যাসী রূপে যেন সুসজ্জিত হতে চাই। চারিদিকে কুয়াশায় অন্ধকার হয়ে থাকায় মানুষের ঘুম যেন চোখ থেকে যেতে চাই না তাদের মাঝে অলসতা ভর করে। চারিদিকে শীতের আগমনে প্রকৃতির মাঝে যেন বৈরাগ্যের সুর বাজে। শীতকাল আসলে মানুষের মাঝে একটা আলাদা অনুভূতি সৃষ্টি হয় চারিদিকে পিঠাপুলির উৎসব শুরু হয়ে যায়।

শীতকালের বৈশিষ্ট্য

ছয়টা ঋতুর মধ্যে ৫ নাম্বার ঋতু হল শীতকাল। বাংলা মাস হিসেবে পৌষ ও মাঘ মাসে প্রচুর পরিমাণে শীত নামে। ইংরেজি ক্যালেন্ডার হিসেবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস শীত অনুভব করা যায়। গ্রীষ্মকালের বিপরীতে শীতকাল এখনকার সময়ে দেখা যায় শীতকালেও অনেক বৃষ্টি হয়। প্রচন্ড গরমের কারণে মানুষের যেমন প্রাণ হারায়, তেমনি অতিরিক্ত ঠান্ডায় অনেক মানুষ প্রাণ হারায়। প্রচন্ড শীতে মানুষের বিভিন্ন রোগ শুরু হয় যেমন, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি , নিউমোনিয়া , সর্দি কাশি ইত্যাদি আরো বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়।

শীতের সকাল

চারিদিকে ঘন সাদা কুয়াশায় অন্ধকার হয়ে থাকে সকালে ঘুম থেকে উঠলে চারিদিক যেন কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে। শীতের সকালে প্রচুর পরিমাণে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় মানুষ যেন জমে যায় যাই অবস্থা। সকালে যখন কুয়াশা ভেদ করে হালকা রোদের ছটা মানুষের শরীরে এসে পড়ে মানুষ যেন একটা আলাদা শান্তি অনুভব করে। শহরের শীতের আমেজ অনেকটা ভিন্ন আর গ্রামের শীতের আমেজ ও অনেকটা ভিন্ন।

শীতের সকালে মানুষের যেন আল সামি কাটে না, মনে হয় আরেকটু লেপ মোড়ে দিয়ে ঘুমিয়ে থাকি একটু পরে উঠে কাজ করব। তখন যেন তাদের একটা আলাদা শান্তি অনুভব হয়। কর্মব্যস্ত মানুষেরাও মনে করে আরেকটু ঘুমিয়ে নেই উঠতে যেন মনই চায়না। অনেক সময় প্রচুর কুয়াশার ফলে সকালবেলায় সূর্যর দেখায় মিলে না। আবার অনেক সময় সারা দিনেও সূর্যের মুখ দেখা যায় না। সারাদিনই সাদা কুয়াশা সূর্যকে ঘিরে রাখে।
শীতের সকালে মানুষ যখন ঘুম থেকে উঠে তখন শীতের কারণে কেউবা চাদর কেউ বা সোয়েটার হাত মোজা পা মোজা সবকিছু পরিধান করেও যেন শীত যেতে কমেনা। বাচ্চারা একটু রোদের আভাস পেলে আর ঘরে থাকতে চাই না। তারা ঠান্ডা কমানোর জন্য রোদে গিয়ে বসে খেলা করে। শীতের সময় তারা বিভিন্ন পিঠাপুলি বানিয়ে রেখে সকালে নাস্তা করে থাকে। কারণ শীতের সময় পিঠাপুলি বানালে অথবা যেকোনো খাবার নষ্ট হয় না।

শীতের পিঠাপুলি

শীত আসলে গ্রামের মানুষদের মধ্যে একটি আনন্দ উৎসব শুরু হয়। বাংলার মানুষেরা ঘরে ঘরে পিঠার উৎসব শুরু করে দেয়। তারা বিভিন্ন রকম পিঠা বানিয়ে উপভোগ করে। এই পিঠা উৎসবটা গ্রামের মানুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। যাদের কর্মক্ষেত্রে শহরে থাকতে হয় তারা পীঠাপুলির উৎসবে অংশগ্রহণ করার জন্য শহর থেকে গ্রামে চলে আসে। শীতের সময় বিভিন্ন রকমের মুখরচোক পিঠা তৈরি করা হয়। এসব পিঠাপুলি গুলা খড়ির চুলায় তৈরি করলে বেশি মজা লাগে ।

তাই গ্রামের মানুষ শীত আসার সাথে সাথেই বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরি করে। শীতকালে যে সকল পিঠাগুলো মানুষ বেশি তৈরি করে, যেমন রস পিঠা ,ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা,বকুল পিঠা,তেল পিঠা, বিস্কিট পিঠা,নকশী পিঠা,রসবড়া, ঝাল পিঠা ইত্যাদি আরো বিভিন্ন রকমের পিঠাপুলি তৈরি করা হয়। তারা এসব পিঠাপুলি তৈরি করে শহরে অথবা গ্রামে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয় কারণ এখনো গ্রামের মানুষদের মধ্যে এই নিয়মটা চালু রয়েছে।
কারণ শীতের সময় পিঠাপুলি তৈরির জন্য নতুন খেজুরের গুড় অথবা খেজুরের রস ব্যবহার করে।এতে পিঠের স্বাদ আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়।গ্রামে শীতের সময় অন্ধকার থাকতেই মানুষ খেজুরের রস গাছ থেকে নামিয়ে আনে এবং অনেক বড় ড্রামে করে রস জাল দিতে থাকে। এভাবে জাল দিতে দিতে গুড়ে পরিণত হয়।সেই গুড়ের যেমন রং তেমন স্বাদ আর এই গুড় দিয়ে পিঠা বানানোর জন্য পিঠার স্বাদ আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। এই খেজুরের রস মানুষ মুড়ি দিয়ে খেতে অনেক পছন্দ করে।

শীতে মানুষের অবস্থা

অতিরিক্ত শীতের কারণে মানুষের কর্মজীবনে অনেক ক্ষতি হয়। অনেকে প্রচুর শীতের কারণে বাইরে বের হতে পারে না। অনেক সময় নিম্নচাপের কারণে প্রচন্ড ঠান্ডা এবং চারিদিকে ঘন কুয়াশায় ভরে থাকে এতে মানুষ অফিস আদালতে যেতে পারে না আবার অতিরিক্ত কুয়াশার ফলে চারিদিক অন্ধকার হয়ে থাকে। এতে গাড়ি চলাচল করতে গিয়ে অনেক এক্সিডেন্ট হয়ে থাকে।অতিরিক্ত শীতের প্রভাবে বয়স্ক মানুষ এবং বাচ্চারা বেশি অসুস্থ হয়। কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম তাই তারা অতিরিক্ত শীত সহ্য করতে পারে না।
প্রচন্ড শীতের কারণে মানুষের হাত পা ফেটে যায়। ঠোঁট ফেটে রক্ত বেরিয়ে যায় এবং স্কিল অনেক রুক্ষ ও খসখসা হয়ে যায়।কোন মশ্চারাইজার না লাগালে যেন হাত পা টান ধরে থাকে অতিরিক্ত শীতের কারণে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। কারণ বাংলার মানুষদের শীত সহ্য করার ক্ষমতা অনেক কম।তাই অতিরিক্ত শীত পড়লে মানুষের জীবন ধারণ করতে একটু অসুবিধা হয়ে যায়। যারা রাস্তায় অথবা রেললাইনে থাকে তাদের জন্য শীত একটু বেশি কষ্টকর।

শীতে গ্রামের পরিবেশ

শীতের সময় গ্রামের পরিবেশ একটু আলাদা হয়। শীতের সময় গ্রামের পরিবেশে একটি আলাদা সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। গ্রামের ছেলেরা সকালে উঠে কাজকর্ম শুরু করে। গ্রামের মেয়েরা সংসারিক কাজে লেগে পড়ে। অতিরিক্ত শীত হলেও গ্রামের মানুষেরা বিছানায় থাকে না অনেক মানুষ তো গাছ থেকে রস নামানোর জন্য অন্ধকার থাকতেই উঠে পড়ে কারণ গুড় তৈরি করে আবার বাজারে বিক্রি করতে হবে এতে তারা জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। গ্রামের বাচ্চারা সূর্যের আলো দেখার সাথে সাথে বিছানা থেকে উঠে আসে এবং রোদে গিয়ে খেলাধুলা করে। তাই শহরের চেয়ে গ্রামের পরিবেশ একটু আলাদা সৌন্দর্য হয়।

শীতে শহরের পরিবেশ

শীতের সময় শহরের মানুষেরা ঘুম থেকে অনেক দেরি করে ওঠে। শহরে যেন শীতের সময় সকালবেলায় চারিদিক নিশ্চুপ হয়ে থাকে। কারণ শহরের মানুষের ঘুম থেকে উঠতে প্রায় আট নয়টা বেজে যায়। ঘুম থেকে উঠে শহরের মেয়েরা সকালের খাবার তৈরি করে এবং পরিবারের সবাইকে খাইয়ে ছেলেদের কাজের জন্য বাইরে পাঠায়। শহরের বাচ্চারা সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারে না স্কুলে পাঠানোর জন্য অনেক কষ্ট করে উঠিয়ে দিতে হয়। শহরের মানুষ তেমন একটি পিঠাপুলি তৈরি করে না। তারা পিঠা পুলি খাবার জন্য গ্রামে চলে যায়। শহরে দেখা যায় ছাদে অথবা বারান্দায় বসে তাদের রোদ পোহাতে।

উপসংহার

শীতের সকালটা যত ঋতু আছে তার চেয়ে একটু ভিন্ন রকম মনে হয়। চারিদিকের প্রকৃতি যেন একটু বেশি সুন্দর লাগে। যেমন গাছের পাতায় পাতায় শিশির কণা পড়ে থাকে ঘাসের ওপর শিশির কনা ছড়িয়ে থাকে। মনে হয় কেউ বুঝি এখনই পানি দিয়েছে পা দিলে সাথে সাথে সমস্ত পা ভিজে যায়জ।এই সকল আনন্দ গুলো শীতকাল ছাড়া উপভোগ করা যায় না। এ যেন এক প্রকৃতির অপরূপ লীলা খেলা প্রকৃতি যেন প্রতিটি ঋতুতে সুন্দরভাবে সেজে ওঠে এবং মানুষের মধ্যে আনন্দে ভরিয়ে তোলে।

শেষ কথা

এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।বাংলা প্রবন্ধ রচনা শীতের সকাল এরকম আরো অনেক নতুন নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url