রচনা বাংলাদেশের নারী সহজভাবে জেনে নিন
প্রিয় পাঠক,আপনি রচনা বাংলাদেশের নারী জানার জন্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি
করছেন ।কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। আমি স্টেপ বাই স্টেপ রচনা বাংলাদেশের নারী
জানানোর চেষ্টা করব। আপনি যদি রচনা বাংলাদেশের নারী বিস্তারিত আরো অনেক বিষয়
জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন আপনার কাঙ্খিত
প্রশ্নের সদুত্তর পেয়ে যাবেন।0
প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলে শুধু রচনা বাংলাদেশের নারী সম্পর্কেই আলোচনা করা হয়
নাই এছাড়াও আরো অনেক পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যদি আপনি জানতে চান তাহলে
আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে পড়ুন ।
পোস্ট সূচিপত্রঃ রচনা বাংলাদেশের নারী সহজভাবে জেনে নিন
ভূমিকা
বাংলাদেশের যতগুলো জনসংখ্যা রয়েছে তার মধ্যে অর্ধেকই রয়েছে মেয়েদের সংখ্যা।
কোন দেশের অর্ধেক জনগণকে বিচ্ছিন্ন করে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন করা যায় না।
বাংলাদেশের অধিকাংশ নারীরা পরিপূর্ণ সম্মান এবং মর্যাদা পাচ্ছে না। অনেক কাল আগ
থেকেই আমাদের দেশের নারীরা নিপীড়িত এবং নির্যাতিত। নারী দেশের এবং সমাজের
উন্নয়নের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নারী অনেক যুগ যুগ থেকে সন্তান জন্ম দেওয়া থেকে শুরু করে তারা বিভিন্ন কাজের
সঙ্গে নিয়োজিত থাকে ঘরে এবং বাইরে দুই দিকে তাদের কাজ সামলাতে হয়। এখন আমাদের
দেশের অনেক মেয়েকে সংসারে উন্নতি করার জন্য ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরা বিভিন্ন
কাজে নিয়োজিত হয়। প্রতিটা নারীর পরিপূর্ণ অধিকার পাওয়া উচিত।
নারীর সামাজিক অবস্থা
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে অর্ধেকে নারী কিন্তু অর্ধেক নারী হওয়া সত্ত্বেও
বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার। বাংলাদেশের নারীরা সামাজিক অনুশাসনের কাছে আবদ্ধ থাকে।
বিভিন্ন সামাজিক রীতিনীতি এবং ধর্মীয় রীতিনীতি এসবের ফলে নারীরা আরো অনেক
লাঞ্চিত এবং অবহেলিত। এদেশের নারীদের সমাজের মানুষ মূল্য দিতে চায়না অথবা
মূল্যায়ন করা হয় না। এদেশে যদি কোন নারীর সন্তান না হয় অথবা
সন্তান জন্ম
দিতে না পারে তাহলে সম্পূর্ণ দোষ সেই নারীর উপর এসে পড়ে ছেলেদের কোন দোষ হয় না।
আরো পড়ুনঃ রচনা দেশ প্রেম সহজে জেনে নিন
যদি কোন নারী অধিক সন্তান প্রসব করে তাহলে তার দায়ভার মেয়েদের ওপর এসেই পড়ে
আবার জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে যে কোন ব্যবস্থা মেয়েদেরই নিতে হয় ছেলেদের কোন
দায়িত্ব থাকে না। কিন্তু এখন বাংলার নারীদের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে।
আজ বিভিন্ন নারীরা বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছে কেউ বা বড় বড় অফিসার, কেউ পুলিশ
, কেউবা সরকারি কর্মকর্তা ইত্যাদি বিভিন্নজন বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত হচ্ছে। এখন
গ্রাম থেকে শহর সব জায়গার নারীরা এগিয়ে রয়েছে।
গ্রামে এখনো অনেক মেয়েরা সামাজিক রীতি-নীতির মধ্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।
তারা স্বামী সংসারের দায়িত্ব মুখ বুজে সব কিছু সহ্য করে আসছে। এখনো অনেক গ্রামের
মেয়েরা শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এখনকার মেয়েরা বিভিন্ন পোশাক
শিল্পের সাথে নিয়োজিত হয়ে অনেক উন্নত হচ্ছে। পরীক্ষার রেজাল্ট বিবেচনা করলে
নারীদের রেজাল্ট অনেক ভালো হয় কিন্তু তারপরেও নারীদের যথারীতি সম্মান দিতে চায়
না।
নারী নির্যাতন
বাংলাদেশে এখনো অনেক জায়গায় নারীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। বাংলাদেশের
নারী নির্যাতন একটি অনেক বড় সমস্যা। নারী নির্যাতন যেন এদেশের মানুষের একটি
প্রতিদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এটাকে তারা কিছুই মনে করে না। গ্রামের মেয়েরা
অনেক বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। মেয়েদের যে শুধু স্বামী নির্যাতন করে তেমনটা
নয় তারা শশুর বাড়ির বিভিন্ন মানুষের কাছে নির্যাতিত হয়। যেমন শ্বশুর, শাশুড়ি,
দেবর, ননদ ইত্যাদি এরাও বিভিন্নভাবে বউদের ওপর বিভিন্ন অত্যাচার করতে থাকে।
এ সকল নারী নির্যাতনের শিকার হওয়ার একমাত্র কারণ হলো মানুষ সঠিক শিক্ষায়
শিক্ষিত হতে পারেনি। শাশুড়ি নিজের বাড়ির বউকে নিজের মেয়ে হিসেবে মনে করতে
পারেনা, দেবর নিজের বোন হিসেবে মনে করতে পারেনা ,ননদ নিজের বোন হিসেবে মনে করতে
পারে না ।এর জন্য নারীরা বেশি নির্যাতিত হয় সব শাশুড়ি যদি বউকে নিজের মেয়ে
ভাবতো ননদেরা যদি নিজের বোন হিসেবে মনে করত তাহলে নারী নির্যাতন অনেক কমে যেত।
তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পুরুষ সমাজ নারীদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছে।
অনেক মেয়েদের পরিবার থেকে যৌতুক দিতে না পারলে বিভিন্নভাবে অত্যাচারের শিকার
হচ্ছে মেয়েরা অনেকে তো জীবনও হারিয়ে ফেলছে। এখনকার সময়ে স্কুল কলেজের মেয়েদের
বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে, যেমন মেয়েদের টিস করা , মেয়েদের এসিড
নিক্ষেপ করা, ইত্যাদি অনেক ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। এসিড নিক্ষেপ এর ফলে তাদের
চেহারা ঝলসে যায় এ অবস্থা সহ্য না করতে পেরে অনেক মেয়ে আত্মহত্যা করে। এ সকল
কাজগুলা বিভিন্ন বখাটে ছেলেরা করে থাকে। নির্যাতনের ফলে দেশ বিভিন্ন উন্নয়নের
দিক দিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে।
নারী মুক্তি আন্দোলন
আগেকার নারীদের চেয়ে এখনকার নারীরা তুলনামূলক অনেক সচেতন হয়েছে। একসময় তাই এই
দেশের নারীরা ঘর থেকে বের হতে পারত না। অতীত কালের মেয়েরা সব সময় চার দেওয়ালে
বন্দি থাকতো। বাংলাদেশের মেয়েদের মুক্তির পথ দেখতে সাহায্য করেছিলেন একজন সাহসী
নারী। সে সাহসী নারীর নাম বেগম রোকেয়া। সেই সাহসী নারী প্রথমে নারীদের সচেতন করতে
চেষ্টা করেন। তিনি লেখার পর থেকে নারী মুক্তি আন্দোলন শুরু হয়েছিল।
আরো পড়ুনঃ বর্ষাকালের রচনা সহজ ভাষায় জেনে নিন
তিনি সেই লিখার মাধ্যমে নারীদের বুঝাতে সক্ষম হন যে মানবগোষ্ঠীর পুরুষের সাথে
সাথে নারীদের ও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। নারীদের মুক্তির আন্দোলনের ভূমিকা
পালন করেন কবি সুফিয়া কামাল। তিনি প্রথম নারীদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠানের কথা তুলে
ধরেছিলেন। বাংলাদেশে বিভিন্ন নারী নেত্রী নারী মুক্তির জন্য কাজ করছে। এরা
একত্রিত হয়ে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তুলছে। যদি প্রতিটা নারী নিজেদের সচেতন না করে
তাহলে এ সকল বিভিন্ন আন্দোলন করা ব্যর্থ হয়ে যাবে। এখন বাংলাদেশের অনেক নারীরা
তাদের অধিকার আদায় করতে অনেকটা সক্ষম হয়েছে।
নারীর ক্ষমতা
নারীদের স্বাধীনতাকেই নারীর ক্ষমতা বোঝায় সব ক্ষেত্রে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা
এবং ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করা। নারীর ক্ষমতা বলতে সমাজে সব জায়গায় তাদের অধিকার
প্রতিষ্ঠা করা। এবং তার পাশাপাশি নারীরা স্বাধীনভাবে এবং অধিক মর্যাদার অধিকারী
হয়ে উঠবে। এবং সব জায়গায় নারী পুরুষের অধিকার সমান থাকবে পুরুষের যেমন অধিকার
নারীর তেমন অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীরা যেমন সংসার এবং সন্তান লালন-পালন
করে তেমনি ভাবে পুরুষদেরও সেই দায়িত্ব সমানভাবে পালন করতে হবে।
নারীরা যে কাজ করে পুরুষরাও সেই কাজে সমানভাবে অংশীদার হবে। নারীদের অধিকার বলতে
আমরা বুঝি বাংলাদেশে যেমন পুরুষের সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ তেমনি নারীদের শতকরা ৫০
ভাগ তাই অধিকারও যেন সমান সমান হয়। আইন পুরোপুরি নারীদের পক্ষে হয় না। আমাদের
সমাজে বিভিন্ন অপরাধ যেমন এসিড নিক্ষেপ, মানসিক নির্যাতন, যৌতুক, ধর্ষণ ।
আরো পড়ুনঃ আমাদের গ্রাম রচনা সহজ ভাবে জেনে নিন
এ সকল বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি হলেও কিছুদিন পর আইনের হাত থেকে অপরাধীরা বেরিয়ে
যায়। বিভিন্ন গ্রামে সামাজিক রীতি-নীতির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে আছে অনেক নারী এই
আবদ্ধ হওয়ার ফলে তারা বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। অবশ্য এখন নারীদের সরকার
সমান অধিকার দেওয়ার চেষ্টা করছে। যেমন বিভিন্ন জায়গায় বাবার নামের পাশাপাশি
মায়ের নামও লিখার নিয়ম চালু করেছে। এটা নারীর একটি অনেক বড় ক্ষমতায়নের
বাস্তবমুখী পদক্ষেপ।
উপসংহার
বাংলাদেশের এ সকল মেয়েরা অনেকের মা অনেকের বোন অনেকের মেয়ে আমাদের সবারই
দায়িত্ব তাদের অবহেলা না করে ভালো রাখা। বাংলাদেশে যেমন অর্ধেক মেয়ের সংখ্যা
কিন্তু মেয়েদের আলাদা করে দেখলে কোন দিনই দেশের উন্নতি হবে না। বাংলাদেশের অনেক
মেয়ে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তাই সবাই মিলে এসব নির্যাতন বন্ধ করা
উচিত। ছেলে এবং মেয়ের মধ্যে তফাৎ না করে সবাইকে মানুষ হিসেবে গণ্য করা। সবাই
একসঙ্গে মিলেমিশে ভালোভাবে থাকলে একটি আদর্শ বাসস্থান আমাদের এই দেশ হয়ে উঠবে।
শেষ কথা
এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই
ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। রচনা বাংলাদেশের নারী এরকম আরো অনেক নতুন নতুন
আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার
করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।