আমাদের গ্রাম রচনা সহজ ভাবে জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, আপনি আমাদের গ্রাম রচনা জানার জন্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন ।কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। আমি স্টেপ বাই স্টেপ আমাদের গ্রাম রচনা জানানোর চেষ্টা করব। আপনি যদি আমাদের গ্রাম রচনা বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন তাহলে আমাদের গ্রাম রচনা সুন্দরভাবে বুঝতে পারবেন। এবং এবং খুব সহজভাবে লিখা হয়েছে যা আপনি পড়লে খুব সহজে লিখতে পারবেন।
প্রিয় পাঠক, এখানে আমরা আমাদের গ্রামের অবস্থা, গ্রামের প্রকৃতির সুন্দর্য, গ্রামের মানুষ, গ্রামের মানুষ যেভাবে জীবিকা নির্বাহ করে, গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, গ্রামের সংস্কৃতি,গ্রামের প্রতিষ্ঠান, স্বাধীনতার গ্রামের অবদান এ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তাই আপনারা গুরুত্ব সহকারে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
আমাদের গ্রাম রচনা
ভূমিকাঃ সুজলা সুফলা আমাদের এই গ্রাম গ্রামের চারিদিকে সৌন্দর্য দেখে মন যেন ভালো হয়ে যায়। চারিদিকে সবুজের সমারহো যেদিকে তাকাই সেদিকেই মাঠ,নদী,পুকুর,খাল-বিল গ্রামের পর গ্রাম এরকম অপরূপ সুন্দর যে ভরা। গ্রামের যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই সবুজের লীলা খেলা। গ্রামের এই অপরূপ সুন্দর্য যে কোন মানুষের মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে তুলতে পারে। গ্রামের পরিবেশে একটা আলাদা শান্তি অনুভব করা যায়।গ্রামের শান্ত পরিবেশ সকল মানুষের ক্লান্তি দূর করে দেয়।
গ্রামের অবস্থাঃ আমাদের গ্রামের একটি সুন্দর নাম রয়েছে, আমাদের সেই গ্রামের সুন্দর নাম তুলসীপুর। এই গ্রামটি অবস্থিত রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায়। আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে সুন্দর এক নদী নদীর দু'পাশে কাশবন কাশবনে সাদা সাদা ফুল ফুটে রয়েছে যেটা গ্রামের পরিবেশকে আরো সুন্দর করে দিয়েছে। আমাদের গ্রামে মাঠের পর মাঠ সাড়ি বেঁধে রয়েছে,সেখানে বিভিন্ন শাকসবজি, ধান, পাট, গম ইত্যাদি চাষাবাদ করা হয়, গ্রামে ফরমালিন মুক্ত ফল এবং শাকসবজি পাওয়া যায়।
গ্রামের প্রকৃতির সৌন্দর্যঃ আমাদের গ্রাম দেখতে অনেক সুন্দর । ওঅনেকটা ছবির মত । চারিদিকে সবুজ শ্যামল গাছতলা গাছ পালা যেন শারি বেঁধে রয়েছে। যেমন, কাঁঠাল গাছ, পেয়ারা গাছ, লিচু গাছ, কদবেল গাছ, আমড়া গাছ, নারিকেল গাছ, সুপারি গাছ, শিমুল পলাশ, তাল তমাল এবং আরো বিভিন্ন জাতের গাছপালায় সুসজ্জিত আমাদের এই গ্রাম। আমাদের গ্রামের চারিদিকে ঝোপঝাড় ও লতাপাতায় ভরে থাকে যা সবার মন ভরিয়ে তুলতে পারে। আমাদের গ্রামে গাছে গাছে পাখিদের কিচিরমিচির ডাক যেন মনে প্রশান্তি বয়ে আনে। আমাদের গ্রামে রাস্তার ধারে একটি অনেক বড় বটগাছ রয়েছে, কৃষকেরা কাজ শেষে ক্লান্তি দূর করার জন্য বট গাছের ছায়ায় বসে শান্তি খুঁজে পাই।
গ্রামের মানুষঃ আমাদের গ্রামে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করে যেমন, মুসলমান, খ্রিস্টান এবং হিন্দু ইত্যাদি এর মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা বেশি। গ্রামের মানুষ সবাই মিলেমিশে একসাথে বসবাস করে। তাদের পরস্পরের মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ কম দেখা যায়। যেকোনো কাজেএকজন অপরজনকে সাহায্য করে। একজন যদি বিপদে পড়ে তাহলে আরেকজন সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে। তাই আমাদের গ্রামের মানুষ আমাদের গ্রামের মতই সুন্দর।
গ্রামের মানুষ যেভাবে জীবিকা নির্বাহ করেঃ গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামে অনেক জেলে থাকে, যারা প্রতিদিন মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে ও তা দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে ও কেউ বা তাঁত বোনে,কেউ বা রাজমিস্ত্রির কাজ করে।গ্রামের অনেক মানুষ পড়াশোনা করে বাহিরে চাকরি করে এবং অনেকে দিনমজুরির কাজ করে ও বিভিন্নজন বিভিন্ন পেশায় জীবিকা নির্বাহ করে। আমাদের গ্রামের মানুষ অনেক সাধারন ভাবে চলাফেরা এবং বসবাস করে।
গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাঃ বাংলাদেশের অনেক গ্রামের মানুষ কৃষিকাজের সাথে বেশি নিয়োজিত আছে। কিন্তু আমাদের গ্রামে অনেকে দেশের বাইরে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মাধ্যমে গ্রামের মানুষের আর্থিক অবস্থা অনেক ভালো এবং মজবুত হয়েছে। গ্রামের মহিলারা এখন বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছে, তারা ঘরে বসে বিভিন্ন কাজ করে টাকা আয় করছে যেমন, কেউ নকশী কাঁথা তৈরি করছে, কেউ বা শাড়িতে হাতের কাজ করছে, কেউবা হ্যান্ড পেইন্টিং করছে, কেউবা গালিচা তৈরি করছে ইত্যাদি এ সকল জিনিস শহরে বিক্রি করে গ্রামের মানুষ অনেক অর্থ আই করছে। গ্রামের মানুষ যে সকল জিনিস চাষাবাদ করে যেমন ধান, গম, পাঠ,সরিষা,ভুট্টা ইত্যাদি নানা রকমের বিক্রি করে গ্রামের মানুষ অর্থ উপার্জন করে।
গ্রামের সংস্কৃতিঃ আমাদের গ্রাম সাংস্কৃতিক ভাবে ভাবে অনেক উন্নত। আমাদের গ্রামে ২৬ শে মার্চ ১৬ ডিসেম্বর এ সকল স্মরণীয় দিনগুলিতে বিভিন্ন ধরনের মেলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। গ্রামের অনেক ছেলেমেয়েরা সেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান করে, কেউ নিত্য পরিবেশন করে, গান করে, কবিতা বলে, গ্রাম্য নাটক করে ইত্যাদি এ সকল পারফরমেন্স করে থাকে। আমাদের গ্রামে বৈশাখী মেলা, পিঠার অনুষ্ঠান, নবান্ন অনুষ্ঠান ইত্যাদি হয়ে থাকে। গ্রামের মানুষের একটি পছন্দের অনুষ্ঠান হল পালা গান তারা যেকোনো সময় পালা গানের আয়োজন করে থাকে ও সবাই আনন্দে মেতে ওঠে।
গ্রামের প্রতিষ্ঠানঃ আমাদের গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাই স্কুল রয়েছে। এবং দুইটা কওমি মাদ্রাসা রয়েছে। এবং একটি সরকারি হাসপাতাল আমাদের গ্রামে রয়েছে যেখানে মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা করে। এবং কয়েকটি বেসরকারি অফিস রয়েছে যেখানে গ্রামের শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা চাকরি করি করে। আমাদের গ্রামে যে সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে , পাঁচটা মসজিদ এবং একটা মন্দির রয়েছে। এবং গ্রামের উত্তর দিকে রয়েছে একটি বেসরকারি ব্যাংক।
স্বাধীনতার গ্রামের অবদানঃ আমাদের গ্রামে অনেক চাচা,দাদা,নানা মহান মুক্তি যোদ্ধা ছিলেন। আমাদের গ্রামের মানুষ অনেক সাহসী ছিল। সাহসী ও নির্ভয়তার কারণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা গ্রামে প্রবেশ করতে পারেনি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কে পরাজিত করার জন্য মোড়ে মোড়ে, অঞ্চলে অঞ্চলে আঞ্চলিক কমান্ডার নিয়োজিত করা হয়েছিল। যুদ্ধ করার সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের আমাদের গ্রামের অনেক মানুষ শহীদ হয়েছেন। এবং যে সকল মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন সে সকল মুক্তিযোদ্ধার স্মরণে এ গ্রামে স্মৃতিসৌধ ও শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে।
উপসংহারঃ আমাদের তুলসীপুর গ্রাম আমাদের কাছে অনেক গর্ব করার মতো একটি গ্রাম। আমাদের গ্রাম আমাদের কাছে অনেক প্রিয়। আমাদের গ্রামের মানুষ অনেক অতিথি পরায়ন তাদের বাসায় অতিথি আসলে অনেক হাসিখুশি ভাবে আপ্যায়ন করে। আমাদের গ্রামের সৌন্দর্য আরো অনেক গ্রামের থেকে একটু আলাদা। তুলসীপুর গ্রামের মানুষ সবার সঙ্গে মিলেমিশে একসঙ্গে অনেক ভালোভাবে বসবাস করছে।
শেষ কথা
এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আমাদের গ্রাম রচনা এরকম আরো অনেক নতুন নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।